সেনাপ্রধান জেনারেল এস এম শফিউদ্দিন আহমেদ বলেছেন, বাস্তুচ্যুত মিয়ানমার নাগরিকরা একটি আঞ্চলিক সমস্যা। দীর্ঘদিন এই জনগোষ্ঠীকে স্থান দেওয়ার ফলে সৃষ্ট নিরাপত্তাঝুঁকি দূরীকরণের লক্ষ্যে তিনি দ্রুত রোহিঙ্গা প্রত্যাবর্তনের বিষয়ে গুরুত্বারোপ করেছেন।
মিয়ানমার সেনাবাহিনীর প্রতিনিধিদলের সঙ্গে সাক্ষাৎকালে তিনি এ কথা বলেন।
মিয়ানমার সেনাবাহিনীর তিন সদস্যের একটি প্রতিনিধিদল কমান্ডার ব্যুরো অব স্পেশাল অপারেশনের লেফটেন্যান্ট জেনারেল ফোঁ মিয়াতের নেতৃত্বে বুধবার (২৬ অক্টোবর) সেনাবাহিনী সদরদপ্তরে বাংলাদেশ সেনাবাহিনী প্রধান জেনারেল এস এম শফিউদ্দিন আহমেদের সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ করেন।
বৃহস্পতিবার (২৭ অক্টোবর) রাতে আন্তঃবাহিনী জনসংযোগ পরিদপ্তরের (আইএসপিআর) পক্ষে থেকে পাঠানো এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
সাক্ষাৎকালে পারস্পরিক কুশল বিনিময় ছাড়াও প্রতিনিধিদলটি নিজ দেশের পরিস্থিতির ওপর আলোকপাত করেন এবং বন্ধুপ্রতিম দেশ হিসেবে পারস্পরিক সৌহার্দ্য অটুট রেখে নিজ দেশের শান্তি-শৃঙ্খলা নিয়ন্ত্রণে রাখার চেষ্টা করছেন বলে জানান।
এসময় দুই দেশের সেনাবাহিনীর সম্পর্ক উন্নয়ন, উচ্চপদস্থ সেনা কর্মকর্তাদের বিভিন্ন বিষয় সংক্রান্ত যৌথ আলোচনা, প্রশিক্ষণ বিনিময়, সম্মিলিত দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা, প্রাসঙ্গিক তথ্য বিনিময় ইত্যাদি বিষয়ে আলোচনা করেন এবং আঞ্চলিক নিরাপত্তা নিশ্চিতকল্পে একসঙ্গে কাজ করার আহ্বান জানান সেনাপ্রধান।
মিয়ানমারের প্রতিনিধি নিজ দেশের প্রগতি ও নিরাপত্তার জন্য কাজ করে যাচ্ছেন বলে জানান এবং বাংলাদেশের সঙ্গে মিত্রতা ও অধিকতর যোগাযোগের মাধ্যমে দ্বিপাক্ষিক বিষয়াদির সমাধানে আগ্রহ প্রকাশ করেন।
এরপর প্রতিনিধিদলটি বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর চিফ অব জেনারেল স্টাফ লেফটেন্যান্ট জেনারেল আতাউল হাকিম সারওয়ার হাসানের সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ করেন। সাক্ষাৎকালে চিফ অব জেনারেল স্টাফ বাংলাদেশ ও মিয়ানমার সেনাবাহিনীর প্রশিক্ষণ বিনিময় ও মান উন্নয়নে সহযোগিতা, দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা মোকাবিলায় সহযোগিতা ইত্যাদি বিষয়ে সহযোগিতা বৃদ্ধির বিষয়ে আলোকপাত করেন।
এসময় তিনি সীমান্ত এলাকায় সামরিক অভিযান পরিচালনার ক্ষেত্রে অধিকতর সতর্কতা অবলম্বনের বিষয়টি স্মরণ করিয়ে দেন। সন্ত্রাসীরা কোনো দেশের পক্ষেই কাজ করে না বলে মন্তব্য করেন লেফটেন্যান্ট জেনারেল আতাউল হাকিম সারওয়ার হাসান।
এছাড়াও চিফ অব জেনারেল স্টাফ দুই দেশের সামরিক প্রশিক্ষণ বিনিময়ের তুলনামূলক চিত্র তুলে ধরেন এবং সীমান্ত এলাকায় শান্তিরক্ষার জন্য উভয় দেশের সীমান্তরক্ষী বাহিনী একসঙ্গে কাজ করবেন বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেন।
মিয়ানমারের প্রতিনিধিদলের বাংলাদেশ সেনাবাহিনী সদরদপ্তরে সৌজন্য সাক্ষাতের মধ্যদিয়ে উভয় সেনাবাহিনীর সম্পর্ক আরও সূদৃঢ় হবে এবং সামরিক বিষয়াদি আরও সহজতর হবে বলে আশা করা হচ্ছে।
পাঠকের মতামত